বাংলাদেশে ইন্টারনেট বিপ্লবের পথিকৃৎ ছিলেন আইএসপিরা। ঘরে ঘরে ব্রডব্যান্ড পৌঁছে দিয়ে তারা গড়ে তুলেছেন দেশের ডিজিটাল ভিত্তি। কিন্তু এখন সেই খাতই দাঁড়িয়ে আছে অস্তিত্ব সংকটে।
আইএসপির অপরিসীম অবদান
যখন ব্রডব্যান্ড ছিল একটি অপরিচিত শব্দ, তখনই একদল উদ্যোক্তা দেশের অলিতে-গলিতে ফাইবার ক্যাবল নিয়ে পৌঁছে গিয়েছিলেন। তারা রাত ৩টায় গিয়ে লাইন ঠিক করেছেন, লাখো শিক্ষার্থী ও ফ্রিল্যান্সারকে যুক্ত করেছেন ইন্টারনেটের সাথে। কোভিডকালেও ঘরে বসে কাজ চালাতে তারা ছিলেন অনন্য সহায়।
চরম চ্যালেঞ্জের মুখে খাতটি
- বিটিআরসির নতুন নীতিমালায় মোবাইল অপারেটরদের তারযুক্ত ব্রডব্যান্ড দেওয়ার সুযোগ
- স্টারলিংকের মতো স্যাটেলাইট ইন্টারনেট আসছে
- ফিক্সড ওয়্যারলেস একসেস (FWA) দিয়ে এমএনওদের আগ্রাসী প্রবেশ
এসব পরিবর্তনের ফলে আইএসপিরা হারাচ্ছে বাজার, আস্থা ও সক্ষমতা।
সমস্যার গভীরে গেলে যা দেখা যায়
- নিম্নমানের সেবা ও সাপোর্ট
- উচ্চ কর, ভ্যাট ও রাজস্ব ভাগাভাগি
- অ্যাকটিভ শেয়ারিংয়ের অনুপস্থিতি
- অবৈধ লাইসেন্সধারীদের প্রতিযোগিতা
এসব কারণে উদ্যোক্তারা পড়েছেন নাজুক অবস্থায়।
আইএসপিদের সম্ভাবনা কোথায়?
- স্থানীয় কমিউনিটির সাথে গভীর সংযোগ
- দ্রুত রেসপন্স ক্ষমতা
- কম খরচে নির্ভরযোগ্য ইন্টারনেট
- গ্রাহক আস্থা ও লয়ালটি
টিকে থাকতে কী করতে হবে?
- সেবার মান উন্নয়ন, ব্যাকহল ও মনিটরিং বাড়াতে টেক ইনভেস্টমেন্ট
- ২৪/৭ কাস্টমার কেয়ার ও প্রফেশনাল সাপোর্ট চালু
- নিজস্ব CRM, Billing, Alerting সিস্টেম গড়ে তোলা
- নীতিনির্ধারক পর্যায়ে সক্রিয় অংশগ্রহণ
- গ্রামীণ বাজারে প্রবেশ ও কমিউনিটি প্রোগ্রাম শুরু করা
- বিকল্প আয়মুখ - IP টিভি, ক্লাউড, সিডিএন ইত্যাদি চালু
সরকারের ভূমিকাও গুরুত্বপূর্ণ
- আইএসপিদের জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি
- SOF আদায় বন্ধ ও Revenue Share থেকে অব্যাহতি
- ইন্টারনেটকে IT-enabled Service হিসেবে ঘোষণা
- Active Sharing অনুমোদন প্রদান
উপসংহার
এই খাত আজ সংকটে, তবে এটিই হতে পারে নতুন করে গড়ে ওঠার সুযোগ। অভিজ্ঞতা, কমিউনিটি লয়ালটি, ইনফ্রা ও আত্মবিশ্বাসকে কাজে লাগিয়ে আইএসপিরা ঘুরে দাঁড়াতে পারে। তবে প্রশ্ন একটাই—সরকার কি দেশীয় উদ্যোক্তাদের পাশে দাঁড়াবে?
Post a Comment
If you any Question, Please contact us.