Neemkuni Tech

সপ্তাহ তিনেক আগে বৈজ্ঞানিক উপায়ে বায়ো ইঞ্জিনিয়ারিং ব্যবহার করে ‘সুপার সোলজার’ বা বিশেষ ক্ষমতাসম্পন্ন সৈন্য বানানোর ঘোষণা দিয়েছে চীন। এখন সে পথে হাঁটার ঘোষণা দিলো ফ্রান্সও। দেশ দুটি বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি ব্যবহার করে সৈন্যদের সক্ষমতা বৃদ্ধি করবে। বিশেষ প্রজাতির এই সেনাদের তৈরি করা হবে কেবল খুন করার জন্য। গত সপ্তাহে এমন সেনা তৈরির অনুমোদন দিয়েছে ফরাসি সরকার। অনেকে আশঙ্কা করছেন, ভবিষ্যতে সব দেশেই এরকম কৃত্রিম উপায়ে শক্তি বর্ধিত করে সেনা তৈরি করা হতে পারে। এ খবর দিয়েছে দ্য নিউ ইয়র্ক পোস্ট। খবরে বলা হয়, ফ্রান্স ‘বায়োলজিক্যালি ইঞ্জিনিয়ারিং’ বা জৈব প্রকৌশল পদ্ধতিতে সেনাদের ‘শারীরিক, মানসিক,জ্ঞান ওঅনুভব করার ক্ষমতা’ বৃদ্ধি করতে চাইছে। এসব সেনাদের অবস্থান সম্পর্কে সর্বক্ষণ নিশ্চিত থাকতে তাদের শরীরে থাকতে পারে ‘লোকেশন ট্র্যাকিং’ প্রযুক্তি। তাদের সাথে থাকতে পারে বিশেষ অস্ত্র। ফরাসি প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এসব সেনা তৈরিতে বিভিন্ন ওষুধ তৈরি করেছে যেগুলো সেনাদের দীর্ঘক্ষণ সজাগ থাকতে বা লড়াই করতে সহায়ক হবে। এমনকি তাদের শ্রবণশক্তি বাড়াতে সার্জারিও করা হতে পারে। নতুন প্রজাতির এই বিশেষ সেনাদের ডাকা হচ্ছে ‘হোমো রোবোকোপস’। তাদের শক্তি বাড়াতে ও দ্রুত করে তুলতে ডিএনএ-তেও পরিবর্তন আনা হতে পারে এই সেনাদের। যোগ করা হতে পারে রোবটের মতো অঙ্গপ্রত্যঙ্গও। কিংস কলেজ লন্ডনের যুদ্ধ বিষয়ক ভিজিটিং অধ্যাপক মাইক্যাল ক্লার্ক দ্য সানকে ফ্রান্সের নতুন উদ্যোগ নিয়ে বলেন, আমরা এখন পর্যায়ে আছি যে, সম্ভবত আমরা অন্যান্য প্রাণীর মতো মানুষকেও ডিএনএ পরিবর্তন করে তাদের শক্তি, সহনশীলতা বৃদ্ধি করতে পারবো। ক্লার্কের মতে, চীনের দেখানো পথ ধরে বিশ্বজুড়ে জৈব প্রকৌশলের প্রতিযোগিতা তীব্র হয়ে উঠছে। তিনি বলেন, চীন এখন যা ভাবছে তার বাস্তবায়ন হতে হয়তো আরও ৩০ বছরের মতো লাগবে। ১০ বছর কেটে যাবে পরীক্ষা-নীরিক্ষাতেই। এদিকে, ডিএনএ-তে কৃত্তিম উপায়ে পরিবর্তন আনার ফলে ভবিষ্যতের সেনারা হয়তো রোগ-বালাইয়ের বিরুদ্ধে উচ্চ প্রতিরোধ ক্ষমতাসম্পন্ন হতে পারেন। একইসঙ্গে তারা অনুভ‚তিহীনও হয়ে উঠতে পারে। ইউরোপের ইন্টারন্যাশনাল সোসাইটি ফর মিলিটারি এথিকস-এর এক সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে, সর্বক্ষণ লড়াইয়ে সক্ষম বায়োনিক (কৃত্রিম অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ সম্পন্ন) সেনার কথা বলা হয়েছে। ওই প্রতিবেদন উদ্ধৃত করে দ্য সান জানিয়েছে, কৃত্রিম উপায়ে শক্তিবর্ধন করা সেনাদের বায়োনিক সেনায় রূপ দেওয়া হবে। তারা দ্রুত দৌড়াতে পারবে, তাদের ঘুমের প্রয়োজন হবে না, অল্প খাবার ও পানিতেই বেঁচে থাকতে পারবে ও সর্বক্ষণ লড়তে পারবে। নতুন এক প্রজাতির জন্ম হলো : হোমো রোবোকোপাস। ফ্রান্সের দাবি, তারা বিশেষ সেনা তৈরির পুরো প্রক্রিয়ায় মানবাধিকার বিষয়ক আইন মেনে চলবে। তবে দেশটির সশস্ত্র বাহিনীর মন্ত্রী ফ্লোরেন্স পারলি বলেন, আমাদের এখানে স্পষ্ট হতে হবে যে, সবাই আমাদের মতো একই নীতিগত অবস্থান মেনে চলবে না। আমাদের তেমন ভবিষ্যতের জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে। দ্য সান, নিউ ইয়র্ক পোস্ট।

Post a Comment

If you any Question, Please contact us.

Previous Post Next Post