সহযোদ্ধা

অনেক  মুমূর্ষু কোভিড-১৯ রোগী জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে আপনার সহযোগীতার প্রহর গুনছে! আপনার দেয়া প্লাজমা তার জীবন ফিরিয়ে দিতে পারে। গতকাল মঙ্গলবার (৯ জুন)  অনলাইন অনুষ্ঠানের মাধ্যমে উদ্বোধন করা হল ‘সহযোদ্ধা’ নামের একটি প্লাজমা নেটওয়ার্ক। 


উদ্বোধন করেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। করোনার রোগী সুস্থ হওয়ার পর তাঁর প্লাজমা সংগ্রহ এবং তা বিতরণে ‘সহযোদ্ধা’ নামের এই  প্লাজমা নেটওয়ার্কটি  চালু  করা হয়েছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, এটুআই ইনোভেশন ল্যাব এবং সফটওয়্যার নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ই-জেনারেশনের সহযোগিতায় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ এ প্লাজমাদাতা নেটওয়ার্ক তৈরি করেছে।

অনুষ্ঠানে জানানো হয়, ‘সহযোদ্ধা’ নেটওয়ার্কের মাধ্যমে করোনা রোগীর চিকিৎসায় প্লাজমাদাতা এবং গ্রহীতার মধ্যে একটি সংযোগ তৈরি করবে। করোনায় আক্রান্ত রোগীর জন্য চিকিৎসকের পরামর্শের ভিত্তিতে এই ডিজিটাল প্লাজমা নেটওয়ার্ক থেকে প্রয়োজনীয় প্লাজমা সংগ্রহ করতে পারবেন। তাছাড়া  সহযোদ্ধার ওয়েবসাইটে গিয়ে সুস্থ হওয়া কোনো ব্যক্তি প্লাজমা প্রদানের আগ্রহ জানাতে পারবেন খুব সহজেই। 



আইসিটি বিভাগের  প্রতিমন্ত্রী  জুনাইদ আহমেদ বলেন, ‘বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাস সৃষ্ট স্বাস্থ্য সংকটে বাংলাদেশ সরকার জনগণের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় সফল পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। সরকারের উদ্যোগের ধারাবাহিকতায় সহযোদ্ধা নেটওয়ার্কটি চালু করা হয়েছে, যা করোনাভাইরাস আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসায় সহযোগিতা করবে । তিনি আরো বলেন যে,  আমরা করোনা ভাইরাস মোকাবেলায় বিদ্যমান আইসিটি অবকাঠামোর সুষ্ঠু ব্যবহারের মাধ্যমে জনগণের স্বাস্থ্যসেবা উন্নয়নে ভূমিকা রাখতে চাই।’ 

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন এটুআইয়ের প্রকল্প পরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) মো. আবদুল মান্নান। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন এটুআই ইনোভেশন ল্যাবের প্রযুক্তিপ্রধান ফারুক আহমেদ। 

সহযোদ্ধা

এটুআই ইনোভেশন ল্যাবের হেড অব টেকনোলজি ফারুক আহমেদ জুয়েল বলেন, ‘আমাদের জাতীয় সমস্যা সমাধানে এটুআই ইনোভেশন ল্যাব, বিভিন্ন আরএনডি পার্টনার ও উদ্ভাবকদের সাথে নিয়ে নানা উদ্ভাবনে কাজ করে যাচ্ছে। এর মাধ্যমে সহযোদ্ধার মতো এমন একটি উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। আমাদের বিশ্বাস দেশে প্লাজমা বিতরণের সুবিধার্থে বিভিন্ন স্টেকহোল্ডারদের একসাথে কাজ করার সুযোগ তৈরি করবে।’

ই-জেনারেশন এর গ্রুপ চেয়ারম্যান শামীম আহসান বলেন, ‘আমরা একটি কঠিন সময় অতিবাহিত করছি কিন্তু আমাদের সবচেয়ে বড় শক্তি হচ্ছে আমরা একসাথে কাজ করার সুযোগ পাচ্ছি। এই সংকটকালীন সময় মোকাবেলায় সরকারি-বেসরকারি খাত এবং স্বাস্থ্য খাতের সমন্বয়ে তথ্য প্রযুক্তির সঠিক ব্যবহার করা প্রয়োজন। এ প্রেক্ষিতেই সহযোদ্ধা নেটওয়ার্কটি তৈরি করা হয়েছে এবং এটি প্রযুক্তির উদ্ভাবনের ক্ষেত্রে আদর্শিক বহিঃপ্রকাশ।’

এটুআই প্রকল্প পরিচালক ড. মো. আবদুল মান্নান বলেন, ‘এটুআই সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানকে সাথে নিয়ে করোনা মোকাবেলায় শুরু থেকে কাজ করে যাচ্ছে। আমরা আশা করি এই ‘সহযোদ্ধা’ প্ল্যাটফর্মটি খুব দ্রুত স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় সফলতার সাথে যুক্ত হবে।’

বিশেষ অতিথি ছিলেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক আমিনুল হাসান। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক আমিনুল হাসান বলেন, ‘করোনা ভাইরাস সম্পূর্ণ ভিন্ন মাত্রার একটি সংকট এবং এর জন্য অভূতপূর্ব স্কেলের প্রতিক্রিয়া প্রয়োজন। বর্তমান পরিস্থিতিতে সহযোদ্ধার মতো এমন একটি প্ল্যাটফর্ম খুব জরুরি হয়ে পড়েছে। করোনা ভাইরাস মোকাবেলায় স্বাস্থ্যখাতকে এ ধরনের প্রযুক্তি নির্ভর ব্যবস্থাকে গ্রহণ করা প্রয়োজন এবং আমি এমন উদ্যোগের সাফল্য কামনা করছি।’



লেখকঃ মোঃ মাহমুদুল হাসান (মেকাট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ার)

Post a Comment

If you any Question, Please contact us.

Previous Post Next Post